২৪ ঘণ্টায় উন্মোচিত মিনা হত্যার রহস্য, বেড়িয়ে এলো থলের বিড়াল

নীলফামারীতে চাঞ্চল্যকর মিনা হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছেন।

আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান। পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খবরের ভিত্তিতে সদরের খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের হালিরবাজার এলাকার মনির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছন থেকে এক নারীর অর্ধ উলঙ্গ লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে জানা যায়, ওই গৃহবধূ এলাকার গনেশ চন্দ্রের ছেলে শ্রী তিমোথীর স্ত্রী মিনা ওরফে সাথী। তিনি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর ইউনিয়নের গোবিন্দ পাড়ার মৃত ভোমবল ঋষীর মেয়ে।’

মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হলেও পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। এ নিয়ে বহুবার গ্রাম্য সালিস ও বৈঠক হয়েছে। তদন্তে দেখা যায়, স্বামীর অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক, সন্তান না নেওয়ার অনীহা এবং শ্বশুরের কুপ্রস্তারের কারণে বুধবার রাতে বাবার বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে স্বামীর বাড়ি থেকে বের হয় মিনা। এরই মধ্যে স্বামী তিমোথী, শ্বশুর গনেশ, শাশুড়ি শিউলী ও কাকী শাশুড়ি মিনতি রানী ঘটনাস্থলে মিনাকে ধরে মুখে ও যৌনাঙ্গে বালু, কাঁদা ঢুকিয়ে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘এরপরে ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা মিনাকে খোঁজাখুঁজিও করতে থাকে এবং প্রচারণা চালায় মিনার জ্বীনের দোষ থাকায় সে প্রায়ই হঠাৎ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। অপরদিকে লাশ উদ্ধারের পর থেকেই নীলফামারী থানা পুলিশ, জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম এবং সিআইডির তদন্তে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। ফলে স্বামী, শাশুড়ি ও কাকী শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হলে তারা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শ্বশুর গনেশকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, নীলফামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফজালুল ইসলামসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।